গুলশানের জঙ্গি হামলার ঘটনায় নর্থ সাউথ ইউনিভাসিটির সাবেক শিক্ষক প্রকৌশলী হাসনাত করিমকে ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে আটক করেছে কাউন্টার টেররিজম ইউনিট। জব্দ করা হয়েছে তার ব্যবহৃত ব্যক্তিগত ল্যাপটপটি।
গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন, ঘটনার তথ্য জানতে এবং যাচাই-বাছাই করতে তাকেসহ আরো কয়েকজনকে গোয়েন্দা হেফাজতে রাখা হয়েছে। হাসনাত করিম ও তার পরিবার জিম্মি থাকা অবস্থায় একটি ভিডিও ফুটেজ থেকে তাকে সন্দেহের তালিকায় রাখে গোয়েন্দারা।
তবে এ ঘটনায় হাসনাত করিমের সম্পৃক্ততার বিষয়ে এখনো নিশ্চিত করে কিছু জানায়নি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
শনিবার সকালে হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় যৌথ বাহিনির অভিযানের সময় স্ত্রী ও দুই সন্তানসহ নর্থ সাউথ ইউনিভাসিটির সাবেক শিক্ষক, প্রকৌশলী হাসনাত করিম জিম্মিদশা থেকে ছাড়া পান। অভিযানের আগে-পরে রেস্তোরাঁ ও এর আশেপাশের এলাকা থেকে হাসনাত করিমসহ যারা ছাড়া পান; তাদের প্রায় সবাইকেই গোয়েন্দা কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
জিজ্ঞাসাবাদ শেষে অনেককে ছেড়ে দেয়া হলেও হাসনাত করিম এখনো গোয়েন্দা হেফাজতে রয়েছেন।
ঘটনার পরদিন রোববার হাসনাতের বাসা থেকে তার ব্যক্তিগত ল্যাপটপটি জব্দ করেছে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট।
এদিকে, ২০১২ সালে নর্থ সাউথ ইউনিভাসিটিতে শিক্ষক হিসেবে কর্মরত থাকা অবস্থায় হাসনাত করিমের নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হিজবুত তাহরীরের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত থাকার প্রমাণ পাওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়টির ম্যানেজমেন্ট তাকে অব্যাহতি দেয়।
একটি সূত্রে জানা গেছে, জঙ্গি হামলায় অংশ নেয়া নিব্রাস ইসলাম হাসনাত করিমের সরাসরি ছাত্র ছিলেন। ঘটনাস্থলের পাশের একটি ভবন থেকে ধারণ করা ফুটেজে দেখা গেছে, হাসনাত করিম জিম্মি থাকার সময় রেস্তোরাঁর দোতলায় দাঁড়িয়ে সিগারেট টানছেন।
আর তার ঠিক পেছনেই অস্ত্রধারী দুই জঙ্গি দাঁড়িয়ে আছে। ফুটেজে এ সময় তাকে একেবারেই স্বাভাবিক আচরণ করতে দেখা যায়।
এমনকি, ফুটেজে জঙ্গিদের সঙ্গে কথা বলতেও দেখা গেছে।
শনিবার সকালে কমান্ডো অভিযানের আগে উদ্ধার তৎপরতার সময় ঘটনাস্থলে হাসনাত করিমের বাবা উপস্থিত ছিলেন।
তিনি এক পর্যায়ে জানিয়েছিলেন, হাসনাত জিম্মি অবস্থায় তার সঙ্গে মোবাইলে বার্তা পাঠিয়েছেন। সেখানে জিম্মি অবস্থায় তারা ভালো আছেন বলে উল্লেখ করে।
জিম্মি অবস্থায় তাদের কোরআনের আয়াত শুনতে চাওয়া হয়েছিল, এবং তারা সবাই তা পেরেছেন। তবে যারা পারেনি তাদের নির্যাতন করা হচ্ছে বলেও বাইরে অপেক্ষমাণ বাবাকে জানিয়েছেন হাসনাত।
জিম্মি অবস্থায় হাসনাতের গতিবিধি সন্দেহজনক মনে হওয়ায় গোয়েন্দারা তাকে হেফাজতে রেখেছে। তবে এ ঘটনায় তার সম্পৃক্ততার বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনি এখনো নিশ্চিত করে কিছু জানায়নি।
0 comments:
Post a Comment